গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর এলাকায় সরকারি বন বিভাগের প্রায় ২৫ কোটি টাকার জমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশের পর আলোড়ন সৃষ্টি হলেও, এ বিষয়ে তদন্তকে ঘিরে গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, মহানগরীর কাশিমপুরের ১নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বাগবেড় মৌজার মাধবপুর এলাকায় মাহবুবুল আলম গং সরকারি বনভূমির প্রায় ৫০ শতাংশ জমি জবরদখল করে সেখানে সুউচ্চ সীমানা প্রাচীর দিয়ে একটি কারখানা স্থাপন করেছেন।
অথচ এই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির নোটিশ অনুযায়ী তদন্তের সময় ঘটনাস্থলে সাবেক ও বর্তমান রেঞ্জ কর্মকর্তা এবং বিট কর্মকর্তাদের উপস্থিতির কথা থাকলেও তদন্তের দিন শুধু মাত্র বর্তমান কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকতে বলেন তদন্ত কর্মকর্তা উপ-বন সংরক্ষক ডা. মোহাঃ আব্দুল আউয়াল।
এছাড়াও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, কারখানা মালিকদের প্রভাবের কারণে তদন্ত কমিটি ইচ্ছাকৃতভাবে অভিযুক্ত কারখানাটি বাদ দিয়ে পাশেই বিগত ১০ বছর পূর্বে নির্মাণকৃত রেডিয়্যাল কার্টুন ফ্যাক্টরিতে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়েছে। এতে করে প্রকৃত সত্য আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও সন্দেহ করছেন এলাকাবাসী।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনেরও অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে, দখলদারদের পক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদনকে প্রভাবিত করা হচ্ছে।
এব্যাপারে সাবেক কাশিমপুর বিট কর্মকর্তা বনী শাহাদাত হোসেন বলেন, তদন্তের বিষয়ে নোটিশ পাওয়ার কথা থাকলেও আমি কোন নোটিশ পাইনি।
আর আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসেছেন, সে বিষয়টিও আমাদেরকে কোনভাবে অবহিত করা হয়নি। তার জন্য আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে পারিনি।
এছাড়াও সাবেক কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা আশরাফুল আলম দোলন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আপনি যে তদন্তের কথা বলছেন সে বিষয়ে আমি কোন নোটিশ পাইনি।
আর নোটিশ না পেলে আমি কিভাবে যানবো আর কিভাবেই বা যাবো। এছাড়াও আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তো কোথাও যেতে পারি না। আমাদের দায়িত্বে তো সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
তবে ঘটনার বিষয়ে জানতে ঢাকা কেন্দ্রীয় অঞ্চল এর উপ-বন সংরক্ষক ও তদন্ত কর্মকর্তা ডা. মোহাঃ আব্দুল আউয়াল এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরে তারা আমাকে রেড়িয়্যান ফ্যাক্টরি দেখায় কিন্তু আমার সন্দেহ হওয়ায় যে ফ্যাক্টরি নিয়ে নিউজ হয়েছে সে ফ্যাক্টরি দেখাতে বলি।
পরে নিউজ এর সাথে ঘটনার মিল পেয়ে, দেখে চলে আসি আর সাবেক কর্মকর্তাদের আমার অসুস্থতা ও বৃক্ষ মেলার জন্য তাদেরকে নোটিশ দেওয়া হয়ে উঠেনি। নতুন করে নোটিশ তৈরি করে সবাইকে ডাকা হবে।
এছাড়াও তদন্তে টাকা লেনদেনের বিষয়টা যেটা বলছেন, সেটা মিথ্যা এবং তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য একটা পক্ষ চেষ্টা করছেন বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করছেন, দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত এবং প্রভাবমুক্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা না হলে পুরো বনভূমিই একসময় দখলদারদের কবলে চলে যেতে পারে।