চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়ালপুরে একটি এলপিজি ফিলিং স্টেশনে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে দমকল বাহিনীর তৎপরতা ও সৌভাগ্যের কারণে রক্ষা পেয়েছে শতাধিক পরিবার।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে ভাটিয়ালপুর এলাকার জে.কে. এলপিজি ফিলিং স্টেশনে একটি সিএনজিতে গ্যাস ভরার সময় হঠাৎ গ্যাস ট্যাংকের মুখের নজেল খুলে যায়। এতে মুহূর্তের মধ্যেই প্রায় ৬ হাজার লিটার গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ঝাঁজালো গন্ধ, সৃষ্টি হয় তীব্র আতঙ্ক।
ফিলিং স্টেশনের পেছনে সাড়ে ৮ হাজার লিটারের গ্যাস ট্যাংকের পাশাপাশি আরও ২-৩ হাজার এলপিজি বোতল রাখা ছিল। এ অবস্থায় সামান্য একটি স্ফুলিঙ্গ ঘটলেও পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতো বলে আশঙ্কা করা হয়।
ফরিদগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, “খবর পেয়েই আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পানি ছিটিয়ে ট্যাংকের দিকে এগিয়ে যাই এবং নজেলটি বন্ধ করি। এত গ্যাস একসঙ্গে লিক হওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। কেউ যদি অসাবধানতাবশত একটি সিগারেটও জ্বালাত, তাহলে পুরো এলাকা ছাই হয়ে যেত।
জে.কে. এলপিজি ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার সজিব বলেন, “আমি নিজেই গ্যাস দিচ্ছিলাম। হঠাৎ ট্যাংকের একটি নজেল খুলে প্রচণ্ড শব্দে গ্যাস বের হতে থাকে। মুহূর্তেই সাদা ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা।
পাম্পের মালিক তোফাজ্জল হোসেন জানান, সকালে নতুন করে সাড়ে আট হাজার লিটার গ্যাস আনা হয়েছিল। বিকেলের ঘটনায় প্রায় ছয় হাজার লিটার গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে যায়। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত প্রশ্নে তিনি কোনো স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ফিলিং স্টেশনটিতে নিয়মিত নিরাপত্তাবিধি মানা হয় না। এমনকি অগ্নি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও নেই বললেই চলে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “এক মুহূর্ত মনে হয়েছিল চারদিক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠবে। আমরা ছোট বাচ্চাদের নিয়ে পালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাই।
এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্তের দাবি উঠেছে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন আরেকবার যদি এমন কিছু ঘটে, তখন কি কেবল ‘ভাগ্য’ই ভরসা হবে।