1. info@www.jayjaysomay.com : দৈনিক যায়যায় সময় :
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
রাজাপুরে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, থানায় লিখিত অভিযোগ ভূরুঙ্গামারীতে ব্লাড ক্যন্সারে আক্রান্ত ৮ বছরের এক শিশুর জীবন বাঁচাতে আকুল আবেদন বিমান দুর্ঘটনায় শহিদ মাহেরীনের কবরে শ্রদ্ধা জানালেন ডা. জাহিদ হোসেন কালাইয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ইঞ্জিনিয়ার আমিনুর ইসলামের ফরিদগঞ্জ এলপিজি স্টেশনে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল শতাধিক পরিবার ভূরুঙ্গামারীতে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার মাদক ব্যবসায়ী ভাসানী শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো উপমহাদেশের একজন অনন্য রাজনৈতিক পুরুষ- নাহিদ ইসলাম ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি স্বাধীনতার পরে সংস্কার হয়নি ১কিঃ রাস্তা  মিনি পেট্রোল পাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

অযত্ন-অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে নীলফামারীর ঐতিহাসিক হরিশ্চন্দ্র রাজার বাড়ি

নীলফামারী প্রতিনিধি:
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার খুটামারী ইউনিয়নের ঐতিহাসিক হরিশ্চন্দ্র রাজার বাড়ি আজ পরিণত হয়েছে এক অবহেলিত ধ্বংসস্তূপে। স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘হরিশ্চন্দ্র পাঠ’ নামে, এ রাজবাড়িটি একসময় ছিল প্রশাসনিক ও ধর্মীয় কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।

ইতিহাস মতে, ব্রিটিশ আমলে এই রাজবাড়িতে বিচার কাজ, পুঁথি পাঠ, পূজা-পার্বণসহ নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হতো। বাড়িটির নামানুসারে পুরো গ্রামটির নাম হয়ে যায় ‘হরিশ্চন্দ্র পাঠ’। বর্তমানে প্রায় পৌনে দুই বিঘা জমির ওপর রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ মাটির ওপরে দৃশ্যমান থাকলেও এটি এখন অরক্ষিত ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

স্থানীয়দের মতে, মূল রাজবাড়ির কাঠামো ছিল একটি উঁচু ঢিবির ওপর, যার উচ্চতা একসময় ছিল ৪০ থেকে ৪৫ ফুট। সময়ের সঙ্গে তা ক্ষয়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০-১২ ফুটে। ঢিবির মাঝখানে থাকা পাঁচটি বিশাল কালো পাথরের ঘেরা জায়গাটি ছিল রাজবাড়ির মূল স্থাপনা। জনশ্রুতি রয়েছে, এক রাতে পুরো কাঠামোটি অলৌকিকভাবে মাটির নিচে দেবে যায়।

সাবেক ইউপি সদস্য অতুল রায় বলেন, “এই জায়গার অনেক ইতিহাস আমরা ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি। মাঝে মাঝে পাথরের অংশগুলো আবার মাটির উপর ভেসে ওঠে।

প্রতিবছর ১লা ফাল্গুনে এই স্থানে ঐতিহ্যবাহী ‘শিবরাত্রি মেলা’ বসে। মেলায় স্থানীয় হস্তশিল্প ও পণ্যের সমাহার দেখা যায়—গুড়ের জিলাপি, চিনির বাতাসা, কাঠ ও মাটির তৈরি পণ্য, আসবাবপত্র ও খেলনা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, একটি টিনশেড মন্দির এবং কিছু ধ্বংসাবশেষ ছাড়া তেমন কিছু অবশিষ্ট নেই। রয়েছে একটি পুরোনো বিশাল বটগাছ, যার শাখায় একসময় হাজারো হরিতাল পাখির কিচিরমিচিরে মুখর ছিল এলাকা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা উপেন্দ্র চন্দ্র রায় (৭৩) বলেন, “এই স্থানে কেউ কিছু নিলে নাকি রক্তপাত হয়ে মৃত্যু ঘটে। সেই ভয়েই এটি অলৌকিক স্থান হিসেবে পরিচিত।”

১৯৯৮ সালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এলাকাটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়। তবে এরপর আর কোনো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন বলেন, “এই এলাকাটিকে পর্যটন উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, “জেলায় অনেক পুরাকীর্তি রয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে সংরক্ষণের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হচ্ছে।”

উল্লেখ্য, নীলফামারী জেলায় আরও রয়েছে উল্লেখযোগ্য কিছু পুরাকীর্তি—ভীমের মায়ের চুলা, পাল রাজার বাড়ি, বাহালী পাড়া জমিদার বাড়ি, টুপামারী কাছারিবাড়ি, বিন্না দিঘি (নীলসাগর), নীলকুঠি ও দূর্বাছড়ি গ্রামের মোগল আমলের স্থাপত্য।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট