লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকট চরমে পৌঁছেছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে উপজেলার সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ৫০ শয্যার এই হাসপাতালটিতে বর্তমানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ৯৮টি পদ শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই সার্জারি, গাইনী, এনেসথেশিয়া, শিশু, মেডিসিনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অধিকাংশ সময়েই জেলা সদর হাসপাতাল বা বেসরকারি ক্লিনিকের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, হাসপাতালটিতে আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ একটি সম্পূর্ণ সজ্জিত অপারেশন থিয়েটার থাকলেও গত তিন বছর ধরে অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জনবল সংকট এবং এনেসথেসিস্ট না থাকায় কোনো ধরণের বড় অপারেশন বা জরুরি সার্জারি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে গর্ভবতী মায়েদের সিজারিয়ান ডেলিভারি, দুর্ঘটনায় আহত রোগীর জরুরি সেবা বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সেবা প্রত্যাশীদের অভিযোগ, প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক রোগী চিকিৎসা নিতে এসে নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে উচ্চ ব্যয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি সূত্র জানায়, ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও জনবল কাঠামো যুগোপযোগীভাবে বাড়ানো হয়নি। বর্তমানে মাত্র কয়েকজন চিকিৎসক দিয়ে চালানো হচ্ছে আউটডোর ও ইনডোরের কাজ। ২৪ ঘণ্টার জরুরি চিকিৎসাসেবাও রয়েছে অনিয়মিত।
এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন, বিষয়টি একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তারা দ্রুত প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ এবং অপারেশন থিয়েটার চালুর দাবি জানিয়েছেন।
সচেতন মহলের মতে, জনবল সংকট নিরসন এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে সক্রিয় ও কার্যকর করে তুললে, স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্যসেবার মান অনেকাংশে উন্নত হবে।