1. info@www.jayjaysomay.com : দৈনিক যায়যায় সময় :
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১০:০১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
রাজাপুরে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, থানায় লিখিত অভিযোগ ভূরুঙ্গামারীতে ব্লাড ক্যন্সারে আক্রান্ত ৮ বছরের এক শিশুর জীবন বাঁচাতে আকুল আবেদন বিমান দুর্ঘটনায় শহিদ মাহেরীনের কবরে শ্রদ্ধা জানালেন ডা. জাহিদ হোসেন কালাইয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ইঞ্জিনিয়ার আমিনুর ইসলামের ফরিদগঞ্জ এলপিজি স্টেশনে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল শতাধিক পরিবার ভূরুঙ্গামারীতে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার মাদক ব্যবসায়ী ভাসানী শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো উপমহাদেশের একজন অনন্য রাজনৈতিক পুরুষ- নাহিদ ইসলাম ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি স্বাধীনতার পরে সংস্কার হয়নি ১কিঃ রাস্তা  মিনি পেট্রোল পাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

বিরামপুরে সিধুকানুচাঁদ ভৈরব ১৭০তম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস পালিত

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
  • প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

হুল দিবসের চেতনা,অধিকারের লড়াই থামেনা এরই প্রতিপ্রাদ্য নিয়ে দিনাজপুরের বিরামপুরে সিধুকানুচাঁদ ভৈরব ১৭০তম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস পালিত হয়েছে।

অনুষ্টানের পাঠে ছিলেন,সভাপতি সুশীল হাঁসদা উপমেলা আদিপনা সমাজ ছৈন্নয়ন সমিতি কেরোটিন হেক্ষম। দিশাম পারগাল ও উপজেলা আদ্দিকাটী সমাজ উন্নয়ন সমিতি
কারলুশ মার্চ বিজয় সম্পাদক উপজেলা আদিন সমাজ উন্নয়ন সমিতি মুকুল হাসদা সহ সভাপতি উপমেন্ট। আদিকাট সমাজ উন্যান সমিতি।

পাল্টু হাসদা সহ সভাপতি পিকমলা আদিবাসী সমাজ। উন্নয়ন সমিতি তোলাশ চড়ে, সুনিল পাহান,উপস্থিত উপজেলা আদিবাসী কমিটির অনেকে এ আদিবালা মন গোষ্ঠী। সাঁওতাল ও আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে ১৭০তম হুল দিবস পালন হয়। জন্মভূমির প্রতি আবেগ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে সারা পৃথিবীতেই মানুষ যুগ যুগ ধরে এই লড়াই করছে। পরাধীনতার বিরুদ্ধে স্বাধীনতা,ইংরেজ শাসন থেকে মুক্তি,তার পাশাপাশি জমির উপর একচ্ছত্র অধিকারের দাবিতে এই ভূখন্ডে যত লড়াই হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সাঁওতাল বিদ্রোহ। ‘সব ধরনের শোষণ,অবিচার, অত্যাচারের অবসান চাই’ এই দাবি নিয়ে অন্তত ৩০ হাজার সাঁওতাল ভগনাডিহি থেকে কলকাতা পর্যন্ত পদযাত্রা ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল।

শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের বাঁধভাঙা জোয়ার এসেছিল ১৮৫৫ এর ৩০ জুন। সংঘটিত হয়েছিল সাঁওতাল বিদ্রোহ হুল। প্রতিবাদ থেকে স্বাধীনতার লড়াই ১৭৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দমন পীড়ন ও লুণ্ঠনের শিকার হয়েছে তৎকালীন ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীরা। অন্যান্য সম্প্রদায়ের তুলনায় সাঁওতাল জনগোষ্ঠী ব্রিটিশ শাসন শোষণ,সুদি মহাজন,দাদন ব্যবসায়ী ও জমিদারদের নিপীড়নে নিঃস্ব হয়ে পড়েছিল। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে জমিদারদের লাঠিয়াল বাহিনী,ব্রিটিশ পুলিশ জেল জুলুমসহ নানা নিপীড়ন নির্যাতন চালাত। মহাজনের ঋণের ফাঁদে পড়ে বংশ পরম্পরায় সুদের জালে আটকা পড়ত। ঋণ শোধ করতে না পারলে স্ত্রী পুত্র কন্যা পর্যন্ত মহাজনের সম্পত্তি হয়ে পড়ত। পুলিশ দিয়ে তাঁদের গবাদিপশু ও জমি কেড়ে নেয়া হতো।

প্রতিবাদ করলে পাল্টা গ্রেপ্তারের শিকার হত নিপীড়নের খড়গ নেমে আসত তাঁদের ওপর। শোষণ, নির্যাতন,অত্যাচার ও উৎপীড়নে এভাবে সাঁওতালদের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। ফলে একসময় মুক্তির পথ খোঁজেন তাঁরা। বীর সিং এর নেতৃত্বে সাঁওতালরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পাকুড় রাজার দেওয়ান জগবন্ধু রায়ের বিশ্বাসঘাতকতায় তাঁকে জরিমানা করে সবার সামনে জুতাপেটা করে জমিদারেরা। এমনকি সামাজিকভাবে সম্মানিত সাঁওতালদেরও পুলিশ দিয়ে হেনস্থা করা হত। সাঁওতালরা আদালত আর পুলিশ থেকেও কোনো সাহায্য পেতেন না। ফলে ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন তাঁরা। এই আন্দোলনে সামনের কাতারে ছিলেন সিধু,কানু,চাঁদ,ভৈরব। তাঁরা চার ভাই।

সাঁওতাল পরগণার ভাগনাডিহি গ্রামের এক দরিদ্র সাঁওতাল পরিবারে তাঁদের জন্ম। তাঁরা বুঝতে পারেন এবং বোঝাতে চেষ্টা করেন,শোষণ কোন অদৃষ্টের লীলা নয়। তাঁরা এই মত প্রচার করতে থাকেন যে, সাঁওতাল সমাজকে মুক্ত করতে হলে প্রয়োজন স্বাধীন সাঁওতাল রাজ্যের। সিধু, কানু, বিরসা, চাঁদ, ভৈরব, আর দুই বোন ফুলমণি এবং ঝানু মুর্মুর নেতৃত্বে এই আন্দোলন শুধু ভারতবর্ষ নয়, সারা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। শাসকদের শোষণ, অত্যাচার, বঞ্চনার বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে অধিকার আদায়ের এই সংগ্রাম আজও প্রেরণার স্রোত। সিপাহী বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল ১৮৫৭ সালে।

তার আগে ১৮৫৫ তে এই বিদ্রোহ ব্রিটিশ ভারতের প্রথম সশস্ত্র সংগ্রাম বলে মনে করেন অনেক ঐতিহাসিক। সাঁওতাল জনগোষ্ঠী পরাজিত হয়েছেন কিন্তু হার মানেননি আট মাসব্যাপী বিদ্রোহের শেষ পর্যায়ে লেফটেন্যান্ট ফেগানের পরিচালিত ভাগলপুরে হিল রেঞ্জার্স বাহিনীর হাতে সাঁওতালদের পরাজয় ঘটে। সাঁওতাল বিদ্রোহে শুধু পুরুষ নয় নারীদের অংশগ্রহণ ছিল ব্যাপক। দুই বোন ফুলমনি মুর্মু ও ঝানু মুর্মু নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই বিদ্রোহে। ব্রিটিশ সেপাইরা ফুলমনি মুর্মুকে ধর্ষণ ও হত্যা করে তাঁর লাশ রেললাইনে ফেলে রাখে। ১৮৫৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ইংরেজদের সঙ্গে লড়াইয়ে সিধু শহীদ হন এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে কানুকে ফাঁসি দেওয়া হয়। ব্রিটিশদের নিষ্ঠুরতা আর ব্রিটিশদের দালাল, দেশিয় বিশ্বাসঘাতকদের ষড়যন্ত্রের কাছে পরাজিত হন সাঁওতাল বিদ্রোহের বীর সৈনিকেরা। সাঁওতাল বিদ্রোহে সাঁওতালরা পরাজিত হলেও তাঁরা কখনো শোষকদের কাছে আত্মসমর্পণ করেননি। সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল বাস্তবে কৃষক বিদ্রোহ। এর প্রভাব পড়েছিল তেভাগা আন্দোলন ও আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে।

এই দুই ক্ষেত্রেই সাঁওতালদের অবদান অবিস্মরণীয়। আজও যেখানেই লড়াই সেখানেই সাঁওতাল বিদ্রোহ আমাদের সাহস ও প্রেরণা যোগায়। সাঁওতাল বিদ্রোহ তথা হুল দিবসের শিক্ষা: যেখানে অন্যায় সেখানেই প্রতিবাদ,
অন্যায় মেনে নিলে মানুষের মর্যাদা থাকে না, প্রতিবাদের মধ্যেই জেগে থাকে অধিকারের চেতনা। একা নয় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, সবাই মিলে একত্রে বাঁচতে হবে। এই শিক্ষা নিয়ে আমরা হুল দিবস পালন করতে চাই। ভূমির অধিকার সাংবিধানিক অধিকার, মর্যাদা নিয়ে বাস করার অধিকার শুধু আদিবাসীদের বিষয় নয়, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সকল নাগরিকের অধিকার। খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, কাজ, ন্যায্য মজুরি, গণতন্ত্র, ভোটাধিকারসহ মর্যাদাপূর্ণ জীবন প্রতিষ্ঠার যে আন্দোলন বর্তমানে দেশে চলছে সেই আন্দোলনে হুল দিবস আমাদের প্রেরণা ও শক্তি যোগায়। ৩০ জুন হুল দিবসের সমাবেশে আমরা তাই সকলের অংশগ্রহণ, সমর্থন ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করি এবং আদিবাসী-বাঙালি তথা সকল নিপীড়িত জাতিসত্তার শোষণমুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আসুন আওয়াজ তুলি আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সমতলের আদিবাসীদের পৃথক ভূমিকমিশন গঠন কর। দ্রব্যমূল্য কমাও, সিন্ডিকেট ভাঙ্গো। গ্রাম-শহবের শ্রমজীবীদের আর্মি রেটে রেশন দাও।

জাতীয় বাজেটের উন্নয়ন বরাদ্দের ৪০% কৃষিখাতে বরাদ্দ কর। হাটে হাটে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র চালু কর ও কৃষি ফসলের লাভজনক দাম নিশ্চিত কর। অবিলম্বে কান্তনগর তেভাগা চত্বরে সিধু-

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট