লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার মেঘনা নদীতে রাতের আঁধারে নির্বিচারে চিংড়ির রেণু (গলদা চিংড়ির পোনা) আহরণ চলছে। প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে সকাল পর্যন্ত নদীর বিস্তীর্ণ অংশে হাজারো নারী-পুরুষ চিংড়ির রেণু ধরছে, যা দেশের জলজ জীববৈচিত্র্য ও মৎস্যসম্পদের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পোনা ধরার সময় নদীতে বিষাক্ত কীটনাশক ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে লক্ষ লক্ষ দেশীয় মাছ, জলজ উদ্ভিদ ও অন্যান্য প্রাণী মারা যাচ্ছে। যদিও প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ এবং গণমাধ্যম একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তবে বাস্তবসম্মত কোনো কঠোর পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি।
রায়পুরের চরাঞ্চলের চারটি স্পটে এই রেণু নিধন চলছে পুরোদমে। এতে শুধু পরিবেশ নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর প্রাকৃতিক প্রজনন চক্রও। প্রতিদিন কোটি টাকার রেণু পাচার হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
স্থানীয় জেলেরা জানান, দারিদ্র্য ও জীবিকার তাগিদে তারা এই কাজে যুক্ত হলেও এর ভয়াবহতা সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন। মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুমে এভাবে চিংড়ির পোনা ধরলে ভবিষ্যতে নদীতে মাছের ঘাটতি চরমে পৌঁছাতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক লাখ গলদা রেণু ধরতে গিয়ে প্রায় ১০ লাখ অন্যান্য প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী ধ্বংস হচ্ছে। এটি মৎস্য সম্পদের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এ বিষয়ে রায়পুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে নদীর বিস্তৃত চর এলাকায় জনবল ও সরঞ্জামের অভাবের কারণে কার্যকর মনিটরিং করা যাচ্ছে না।
পরিবেশবাদীরা এই অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ও নদী রক্ষা আইনের কঠোর প্রয়োগ দাবি করেছেন।