ভোর চারটা থেকে শুরু করে পুরো ভোরজুড়ে কালো মেঘে ঢাকা ছিল পাবনার আকাশ। ঘড়ির কাঁটায় ছয়টা বাজার কিছুক্ষণ পরই নামে ঝুম বৃষ্টি। টানা দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা স্থায়ী ওই বৃষ্টিতে শহরের অধিকাংশ এলাকা, বিশেষ করে সড়ক ও অলিগলি তলিয়ে যায় পানিতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ টার্মিনাল এলাকা সংলগ্ন মুজাহিদ ক্লাব রোডসহ অন্যান্য রাস্তা।
এই রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ শহরের প্রাণকেন্দ্রে যাতায়াত করে। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে ভ্যানচালক, অটোরিকশাচালক, মোটরসাইকেল আরোহীসহ নানা প্রকার যানবাহনের চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। সৃষ্টি হয় দুর্বিষহ পরিস্থিতির।
সোমবার (২৬ মে) সকালে মাত্র দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতেই এই দুরবস্থার সৃষ্টি হয়। সকাল ছয়টার পর শুরু হওয়া মুষলধারে বৃষ্টিতে শহরের নানা জায়গায় দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুজাহিদ ক্লাব এলাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহল্লায় হাঁটুপানি পার হয়ে মানুষকে গন্তব্যে ছুটতে হচ্ছে। অফিস-আদালতগামী থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
এক শিক্ষার্থী বলেন,
“কিছুক্ষণ বৃষ্টি হলেই আমাদের এলাকায় পানি জমে যায়। হাঁটু সমান পানি পেরিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছি। আজ আমার পরীক্ষা, কিন্তু যানবাহনও পাচ্ছি না। যদি রাস্তাঘাট ও ড্রেনের অবস্থা ভালো হতো, তাহলে আমাদের এত কষ্ট করতে হতো না।”
এক রিকশাচালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“পৌরসভায় ট্যাক্স দিই শুধু হাটুপানির জন্য? এত ট্যাক্স দিচ্ছি অথচ সুবিধা কিছুই নেই। বৃষ্টি হলেই এই রাস্তা পুকুরে পরিণত হয়, আর একটু বেশি বৃষ্টি হলেই সাগর মনে হয়। আজকের এই ভোগান্তি কী করে বলি!”
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে একই চিত্র দেখে আসছেন তারা। নানা প্রতিশ্রুতি থাকলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পুরো এলাকা পানিতে থৈ থৈ করে।
তাদের প্রশ্ন, “এই জনদুর্ভোগ থেকে কবে মুক্তি মিলবে? আদৌ কি মিলবে?”
এমন প্রশ্নের উত্তরে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী ওবায়েদ-উল হক বলেন,আমরা জনদূর্ভোগ এর ব্যাপারে কাজ করছি,আমাদের দেওয়া টেন্ডার পাশ হয়েছে।আমরা আশা করি তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই জনদূর্ভোগ নিরসন হয়ে যাবে এমন আশা করছি।