লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে ব্যাপক নদীভাঙনের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্র এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙনের প্রকোপ মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। এতে শতাধিক কৃষক পরিবারের বসতভিটা, ফসলি জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের তথ্যমতে, অন্তত ১৫টি স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর ফলে নদীর প্রাকৃতিক গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে আশপাশের এলাকা ধ্বংসের মুখে পড়ছে।
চরইন্দুরিয়া, মাছিহাটা ও কাচিহাটা এলাকায় ভাঙনের ফলে ইতোমধ্যে আটটি পরিবার তাদের বসতভিটা হারিয়েছে। এছাড়া দুইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকান, রাস্তাঘাট, মসজিদ ও হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ প্রায় ৫০টি স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে।
একজন ভুক্তভোগী কৃষক বলেন, “প্রতি বছরই একটু একটু করে নদী ভাঙছে। এবার তো এক মাসেই জমিটা গিলে ফেলেছে। কিছুই করার নেই।
নদীতীরবর্তী বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রতিবছর ভাঙন পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তারা অবিলম্বে অবৈধ ড্রেজিং বন্ধ ও নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।
উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের এক বাসিন্দা বলেন, “দশ বছর ধরে বলছি—বাঁধ দেন, কিন্তু শুধু আশ্বাস পাই। আর নদী প্রতিদিনই এগিয়ে আসে।
উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে এবং তদন্তের জন্য একটি টিম গঠন করা হয়েছে। তবে এলাকাবাসী দ্রুত ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে
রায়পুরের মেঘনা নদী তীরবর্তী এলাকায় নদীভাঙন বর্তমানেn একটি মানবিক ও পরিবেশগত সংকটে পরিণত হয়েছে। অবিলম্বে অবৈধ ড্রেজিং বন্ধ, নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।