বরগুনার তালতলী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এ. আই টেকনিশিয়ান আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে গবাদিপশু দেয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত আব্দুল কাদের গত দুই মাস ধরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে অনুপস্থিত রয়েছেন।
সম্প্রতি এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা একত্রিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলা নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের মরানিদ্রা এলাকার বেল্লাল খাঁন ভুক্তভোগীদের পক্ষে এ অভিযোগ দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের 'কৃত্রিম প্রজনন' প্রকল্পের এ. আই টেকনিশিয়ান আব্দুল কাদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে গবাদিপশু দেয়ার কথা বলে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের মরানিদ্রা এলাকার ৩৫ জন লোকের কাছে থেকে এনআইডি কার্ড, ছবি ও বিকাশের মাধ্যমে জন প্রতি ৫ হাজার টাকা করে সর্বমোট ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা নেয়ার দীর্ঘদিন পরও গবাদিপশু দেয়নি। এরপর তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে নানান তালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে আত্মগোপনে চলে যান। পরে ভুক্তভোগীরা আব্দুল কাদেরকে খুঁজতে তার বাড়িতে গেলে পরিবারের লোকজন হত্যার হুমকি দেয়।
ভুক্তভোগী পারভীন বেগম বলেন, 'চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে গবাদিপশু দেয়ার কথা বলেন। এ জন্য জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। পরে ধার-দেনা করে তাকে টাকা দেই। কিন্তু এর পর থেকে আজ-কাল করে ঘোরাচ্ছেন, গবাদিপশু দিচ্ছেন না। এখন তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ভুক্তভোগী বেল্লাল খান বলেন, 'আব্দুল কাদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে গবাদিপশু দেয়ার কথা বলে এলাকার বিধবা, প্রতিবন্ধী, ক্যান্সার আক্রান্তসহ ৩৫ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত গবাদিপশু দেয়নি। গত দুই মাস ধরে আত্মগোপনে চলে গেছে তাঁর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এখন আমাদের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে আব্দুল কাদের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
তালতলী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাদেকুর রহমান বলেন, 'আব্দুল কাদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে গবাদিপশু দেওয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়ে জানতে পেরেছি। যদি এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, 'আব্দুল কাদের গত দুই মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তিনি কোনো উওর না দেওয়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি।'
তালতলী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, 'এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিতভাবে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তালতলী থানার ওসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছি।