পাবনায় ইছামতি নদী পারের অবৈধ বসতি উচ্ছেদ প্রচার মাইক করাকে কেন্দ্র করে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নদী পারের ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেনাবাহীনি কর্তৃক প্রচার মাইক আটকে দেন বিক্ষোভকারীরা।
এসময় নদী পারের বৈধ বসতির পরিবারের সদ্যরা নারী পুরুষ শহরের বিক্ষোভ মিছিল করেন।বিষয়টি দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবগত হলে দ্রুত তারা ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় বিক্ষোভকারীদের সাথে মোবাইলে ভিডিও ও উচ্ছেদ প্রচার মাইকিং করাকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডের সৃষ্টি হয়। এসময় সকলকে শান্ত থেকে বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা।
এর পরে বিক্ষোভকারীরা পুনরায় মিছিল নিয়ে শহরের প্রর্দক্ষিণ করে পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে পথ সভা করেন। পথসভায় বক্তব্য রাখেন ইছামতি নদী পারের বৈধ স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিন্টু, সদস্য শফিউর রেজা নান্না, আল মাসুদ রিজভী, মোঃ আল মমিন, আবুল হাশেম, মোঃ বাবুল হোসেন সহ আরো অনেকে । এসময় আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পাবনা পৌর এলাকার মধ্যে অবস্থিত ইছামতি নদী পারের বৈধ বসতিরা তাদের ন্যায় সঙ্গত দাবি আদায়ের লক্ষে আন্দোলন করে আসছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় থেকে এপর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক বসত বাড়ি উচ্ছেদ করেছেন প্রশাসন।
আমরা আইনের প্রতি আস্থা রেখে আদালতের দারস্থ হয়েছি। এখনো নদী পারের বৈধ বসতির দাবির বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান বিচারাধীন। এরই মধ্যে পৌর এলাকার বাহির থেকে নদী খনন কাজ শুরু করেছেন সেনাবাহী কর্তৃত্বে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আমরা জেলা প্রশাসন জেলা প্রশাসকের নিকট ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নিকট গিয়েছি। কিন্তু নতুন করে এই উচ্ছেদ অভিযানের প্রচার মাইকিং করায় অবগত নয়। তবে কেন আইন অমান্য করে আমাদের উচ্ছেদ করা হবে। উচ্ছেদ অভিযান আতঙ্গে এরই মধ্যে ভুক্তভোগী অসহায় বেশ কিছু পারিবারের সদস্যরা চিন্তায় অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। আমরা জেলা প্রশাসন সহ রাষ্ট্রের প্রধান যারা রয়েছেন তাদের কাছে আবেদন করছি।
নদী পারের বৈধ জমির মালিক ও বসতিদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে ইছামতি নদী খনন করুন। আমরা নদী খননের বিরুদ্ধে নয় তবে সেটি সঠিক নিয়মে হতে হবে। এই দেশের নাগরিক হিসাবে সরকারের দেয়া চারটি বৈধ জমির মালিক হিসাবে আমরা আমাদের ন্যায় সঙ্গ বিচার প্রত্যাশা করছি। নদী পারের এই বৈধ বসতিদের অবৈধভাবে উচ্ছেদ করা হলে আগামীতে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারী দেন আন্দোলনকারীরা। প্রসঙ্গত, ১৭৫৩ কোটি টাকা ব্যায়ে পাবনার ইছামতি নদী খনন শুরু হয়েছে। প্রায় ১৯ কিঃমিঃ দৈর্ঘের এই নদীর পৌর এলাকার মধ্য দিয়ে রয়েছে প্রায় ৫ কিঃ মিঃ। পৌর এলাকার সিঙ্গা বাইবাস এলাকা থেকে দক্ষিন রামচন্দ্রপুরের এই ৫ কিঃমিঃ নদীর দুই পারে প্রায় ১৩ হাজার বৈধ বসতি রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে জেলা প্রশাসন তালিকা অনুসারে ২৮৩ জনের তালিকা অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। ৭টি মৌজায় ৯০টি মামলা পাবনা আদালতে চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।
ইছামতি নদী পুনরুজ্জীবিত সংস্কার ও খনন কাজ সঠিক ও সুন্দর ভাবে করতে বৈধ বসতীতের ক্ষতিপূরণ দিয়ে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাসের সুযোগ করে দিবেন সরকার ও প্রশাসন এমনটাই দাবি তাদের। তাই সমস্যার সমাধান না করে প্রচার মাইক ব্যবহার করে উচ্ছেদ আতঙ্ক সৃষ্টি না করার জন্য প্রশাসনের নিকট অনুরোধ করেন তারা।