সীতারামের পতনের পর তার রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকজন জমিদারের উত্থান ঘটে। তারা ‘রাজা’ উপাধি নিয়ে স্ব স্ব এলাকায় প্রতাপের সঙ্গে রাজত্ব করতে থাকেন।
ঠিক এমনই একজন হলেন ‘রাজা শচিপতি’। কারো মতে আঠারখাদা গ্রামে আবার কেউ কেউ মনে করেন নিজনান্দুয়ালী গ্রামে তার বাড়ি ছিল। রাজা সীতারামের সমর্থক হওয়ার কারণে নবাব মুর্শিদকুলী খাঁনের নির্দেশে নলডাঙ্গার জমিদার কর্তৃক তার পতন ঘটে। সীতারামত্তোর আর একজন রাজা ছিলেন যার নাম দেবল রাজা। মাগুরা সদর উপজেলার ঘোড়ানাছ গ্রামে তার বাড়ি ছিল বলে
রাজধানী
মহম্মপুরের গৌরব রাজা সীতারাম রায় আজ আর নেই, কিন্তু তার অসংখ্যা কীর্তিকালের করাল গ্রাসকে উপেক্ষা করে তার কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। তিনি নির্মাণ করেন মুহম্মদপুর দুর্গ, একাধিক প্রাসাদ, অসংখ্যা মন্দির ও দীঘি। যা মহম্মদপুর সমৃদ্ধির সময়ে মধুমতি নদী এই স্থানের প্রান্ত দিয়া প্রবাহিত ছিল একসময়। ১৮৩৬ খ্রীষ্টাব্দে মহামারীর ফলে মহম্মদপুর প্রায় বিরান হয়ে যায়। কথিত আছে, সীতারামের সৈন্য ছিল ২২০০ এবং যুদ্ধের সময় ছাড়া অন্য সময় তারা জনসাধারনের পানীয় জলের জন্য জলাশয় খনন খনন করতো।উহাদের মধ্যে প্রাচীন দুর্গের ধ্বংসাবশেষ, রাম সাগর, সুখ সাগর ও কৃষ্ণসাগর নামে দীঘি, দোল মঞ্চ ও রাজভবনের ধ্বংসাবশেষ সিংহদরওজা, মালখানা, তোষাখানা, দশভুজা মন্দির, লক্ষ্মী নারায়ণের অষ্টকোন মন্দির, কৃষ্ণজীর মন্দির প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। অতীতে এই দুর্গের চর্তুদ্দিকস্থ খাত দিয়া মধুমতির স্রোত প্রবাহিত হইতো। মাগুরা সদর হতে ২৫ কি.মি. দূরে মহম্মদপুর উপজেলায় রাজবাড়ি নামক স্থানে রাজা সীতারাম রায়ের বাড়িটি অবস্থিত। মহম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড হতে আধা কিলোমিটার উত্তরে পাকা রাস্তার পার্শ্বে রাজবাড়ির অবস্থান। রিক্সা, ভ্যান অথবা পায়ে হেটে যাতায়াত করা মহম্মদপুর দুর্গ, সিংগদরজা, রাজ প্রাসাদ (ভগ্নাংশ), বিলাস গৃহ (অস্তিত্ব নেই), কোষাগার(অস্তিত্ব নেই), মালখানা (অস্তিত্ব নেই), তোষা খানা(অস্তিত্ব নেই), নহবত খানা(অস্তিত্ব নেই), গোলাঘর (অস্তিত্ব নেই), কারাগার (অস্তিত্ব নেই), দশ ভূজা মন্দির ( আছে)
লক্ষী নারায়ণের অষ্টকোণ মন্দির (আছে), জোড় বাংলা মন্দির, নড়াইল( আছে ), শিব মন্দির (অস্তিত্ব নেই), দোল মঞ্চ (অস্তিত্ব নেই), পঞ্চরত্ন মন্দির -ভুষণার রাজা সীতারাম কর্তৃক নির্মিত সুখ সাগর ও বাইরের গড়ের পশ্চিমে অবস্থিত কালাইনগর গ্রামে কৃষ্ণসাগরের পাড়েই এ মন্দিরটির অবস্থান ছিল।
সীতারাম কর্তৃক নির্মিত মন্দিরের আয়তন ও উচ্চতা অন্যান্য মন্দির থেকে বেশি ছিল। পূর্বদিকে তিনটি প্রবেশ পথ ছিল, যা অর্ধবৃত্তাকারে খিলালের সাহায্যে নির্মিত। এরপরে বারান্দা ছিল। বারান্দার পরে মন্দিরের গর্ভগৃহ ছিল। গর্ভগৃহের উপর একটি ও মন্দিরের চারকোণে চারটি বুড়া বা রত্ন ছিল। মন্দিরে মোট পাঁচটি রত্ন থাকার জন্য মন্দিরটির নাম পঞ্চরত্ন হয়েছিল।
গর্ভগৃহের উপর অবস্থিত চুড়াটি খুব উঁচু ছিলো। এখানে রাধা কৃষ্ণের যুগল মূর্তি প্রতিষ্ঠিত ছিল। মন্দিরের দেয়াল নানা মুর্তির সাহায্যে অঙ্কিত ছিল। পূর্ব দেয়ালে অঙ্কিত মূর্তি চিত্র বেশি দেখা যেত। মন্দির গার্তে অঙ্কিত কৃষ্ণ ও বনরাম মূর্তি উল্লেখযোগ্য। বর্তমানের মন্দিরটি প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।
রাজা সীতারাম রায়ের কাঁচারী বাড়ী রামসাগর দীঘি - এটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৫০০ ফুট ও প্রস্থে ৬০০ ফুট। ইহার জল এখনও প্রায় নির্ম্মল ব্যবহারোপযোগী আছে।কৃষ্ণসাগর দিঘী- এটি মহম্মদপুর দুর্গের দক্ষিণ পূবর্ব দিকেকা নাই নগর গ্রামে অবস্থিত।
সুখসাগর দিঘী
মনিরামপুর উপজেলা- রাজা সীতারাম রায়ের উকিল মুণিরাম রায়ের নামে এই এলাকার নাম মণিরামপুর হয