ঙ্গাইলের মির্জাপুরে হাটুভাঙ্গা এবং বংখুরী এলাকায় রাতের আধারে তৈরি হচ্ছে বসতবাড়ি। দখল করা হচ্ছে বনবিভাগের জমি। কাটা হচ্ছে বনের গাছপালা।
পাহাড় পৃথিবীর অন্যতম রক্ষাকবচ। পাহাড়কে বলা হয় পৃথিবীর পেরেক। পেরেক মেরে যেমন কিছু আটকে রাখা যায় তেমনি পাহাড়ও পৃথিবীর উপরিস্থলের প্লেটগুলোকে আঁকড়ে ধরে রাখে। মাটির ওপরে পাহাড়ের দৃশ্যমান অংশ ছাড়া মাটির নিচে রয়েছে বিস্তৃত আরেক অংশ অনেকটা ফ্রাস্টাম অব কোনোর মতো। এই অংশ পাহাড়ের স্থায়িত্ব ও ভূপৃষ্ঠের ভারসাম্য বজায়ে বিরাট ভূমিকা রাখে। এমনকি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় রেখে চলে বিশেষ ভূমিকা।
পাহাড়কে কেটে ফেললে বা পাহাড় উপরিস্থিত বৃক্ষের বিনাশ পাহাড়ের রক্ষাকবচের ভূমিকাকে অকেজ করে দেয়। একসময় পাহাড় নিজেই দুর্বল হয়ে ধসে পড়ে। নদনদী, গাছপালার মতোই পাহাড় পরিবেশ-প্রতিবেশের এক বিশেষ অনুষঙ্গ যার বিনাশ পৃথিবীকে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে ঠেলে দেয়। বর্ষা ও শীত মৌসুম এলেই দেশে পাহাড় কাটার ধুম পড়ে যায়। এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে চলেছে ।
সব আইন-কানুন উপেক্ষা করে। অদৃশ্য কোন এক শক্তির বলে। পাহাড় কেটে কখনও মাটি লুট করা হচ্ছে। পাহাড় কেটে ভূমি সমতল করে কাটা পাহাড়ের গায়ে গড়ে তোলা হচ্ছে অবৈধ বাড়িঘর।পাহাড়ের বন উজাড় ও পাহাড় কাটার ফলে জীববৈচিত্র্য হচ্ছে হুমকির সম্মুখীন, বন্যপ্রাণী হারাচ্ছে আবাসস্থল। প্রকৃতি হয়ে পড়ছে ভারসাম্যহীন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত পাহাড়ের মালিকানা ভূমি মন্ত্রণালয়ের। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় বনজ সম্পদ রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত।
পাহাড় কাটা, পাহাড় কেটে অবৈধ বাড়িঘর নির্মাণ পরিবেশ সংরক্ষণ বিধি ১৯৯৫-এর ১৫ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এর জন্য রয়েছে শাস্তির বিধান। তবে পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। তাই পাহাড় কাটা, বসতি স্থাপনও থেমে নেই। হাটুভাঙ্গা বিট এলাকায় ১৩টি ঘর। বাজাইল বিটের আওতাধীন বংখুরী পর্ব ও দক্ষিণ এলাকায় মোটঃ ০৫টি ঘর নির্মাণ হয়েছে । ২ বিটে মোট ১৮ টি ঘর নির্মাণ হচ্ছে।
তবে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, এটি বংখুরী এলাকার কিছু সিন্ডিকেট ব্যক্তির কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে ঘর তৈরি করছে। এই সিন্ডিকেটটি রাতের আঁধারে বনের গজারি গাছ কেটে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে বলে জানা যায়।
বন বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন যে, বংখুরী এলাকায় যারা অবৈধভাবে সরকারি জমির উপর যারা ঘর নির্মাণ করছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এবং দুটি মামলায় ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। সকলকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
হাটুভাঙ্গা বিট কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে দিনে জানান যে, রেঞ্জারসহ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘর গুলো ভেঙ্গে দিয়েছে । এ কথা তিনি জানান।